কবি হরিৎ বন্দোপাধ্যায়ের কবিতার পাঠ প্রতিক্রিয়া


       " কবিতার মুখোমুখি দেবাশীষ"


বিগলিত অক্ষরধারায় পাঠকের শুদ্ধ স্নান
           
             দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়
                উত্তরপাড়া, হুগলি 





অ্যাথেরোস্ ক্লেরোসিস হলো ধমনীর ভিতরে কোলেস্টেরলের আস্তরণ জমে গিয়ে রক্ত চলাচলের পথ সংকীর্ণ হয়ে যাওয়া যা ওষুধের সাহায্যে গলিয়ে দেওয়া হয় 'থ্রম্বোলিটিক থেরাপি'র মাধ্যমে। সংস্কৃতির মননে রক্ত সঞ্চালনের এইরকম বৈরস্য দূর করার  'ওয়ার্ডোলিটিক থেরাপি ' যেন ঢাকার  'পুন্ড্রবর্ধন' প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত দুই বাংলার দুই শ্রদ্ধেয় কবি সৌমিত বসু ও শাহীন রেজার 
যৌথ কবিতা সংকলন ' দুই নদী এক ধারা ' !
" আকাশ - আলোর আমরা সুত
     নূতন বাণীর অগ্ৰদূত
     কতই বা কি করব মোরা
      নাইকো তার অন্ত রে !" অক্ষর দামালপণায় এক অপরিসীম চিন্তার সম্ভাবনাকে পাঠকের হাতের মুঠোয় ধরে ফেলার দিগন্ত খুলে দেন এই দুই কবি ।চোদ্দটি করে কবিতার দুইমুখী সংকলনের অভিনব ভাবনায় যোগ করে আরো এক প্রবর প্রয়াস --প্রতিটি কবিতার ইংরাজী অনুবাদের ( অনুবাদক: সুলক্ষণা আঢ্য ও জয়িতা ভট্টাচার্য) আত্মমগ্ন আলিঙ্গনে। দুই বাংলার দুই জনপ্রিয় কবির অক্ষর অভিসার এক স্রোত হয়ে বইতে থাকে পাঠকের ভাবনার আনন্দে। অক্ষরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পাঠকের মনে মির্জা গালিব বেজে ওঠেন দুই কবির কবিতার শ্রেষ্ঠত্বের চন্দ্রাতপে ----
" হ্যায় অওর ভি দুনিয়ামে সুখনওয়ার বহত আচ্ছে,
কহতে হ্যায় কে গালিবকা হ্যায় আন্দাজ - এ-বয়া কুছ অওর।"
কথাকার আরও ঢের আছেন দুনিয়াতে। তবুও লোকে কেন এমনি বলে যে গালিবের বলার ধরনই আলাদা।পাঠক দুই কবির ব্যাপ্ত জ্বলজ্বলে, সাহসী, রুদ্র নিজস্ব আকাশে মৃত্যুঞ্জয় নান্দনিক  শ্রেষ্ঠত্বের উল্লাস সঞ্চয় করেন অক্ষরের ঠোঁটে রক্ষাকবচহীন প্রার্থনার মতো।
মুগ্ধতার গোলাপ - পাপড়ি ওড়ে মন্দানিলে, কখনও বা বিজিগীষার ঝিমকিনি পাঠকের মনচাতালে ----
" আগুন মুখে করে উঠে আসছি
আর মনে পড়ছে জলপরীদের কথা
এবার থেকে কাদের নিঃশ্বাস লেগে
অস্পষ্ট হবে জানালার কাঁচ?
ভাত বেড়ে রোদ আড়াল করতে
কেই বা মেলে দেবে সমস্ত প্রশ্রয়?"(কবি: সৌমিত বসু)
Lord Byron বড়ো প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন পাঠকের চিত্তমুগ্ধতায় ---
" But words are things,and a small 
 drop of ink,
Falling, like dew, upon a thought
produces
That which makes thousands,
perhaps millions think."

একই মুগ্ধতার সূনৃত সেবধি প্রিয় শাহীন রেজার কলমেও যখন তিনি তার প্রিয় বন্ধু ' সৌমিতের 
জন্মদিনে' লেখেন ----
" পাতার ওপর জেগে থাকা মর্মরে
আজ তুই সত্য হয়ে যা,
মন্ত্রের মতো ছেয়ে থাকা উঠোনে আজ তুই
শষ্য হয়ে ওঠ, জোছনা হয়ে ওঠ।
জন্মের এই তো সুখ; বারবার জেগে ওঠা --
বারবার ফিরে আসা চেতনে রোদনে।
তুতেনখামেনের পাশে গলিত লাভায়
বারবার চিহ্ন আঁকা যোনি ও জনকের।
আজ তুই বৃষ্টি হয়ে ঝর, আজ তুই মায়া হয়ে
ছায়া হয়ে , হয়ে ওঠ পৃথিবীর একজন।"
শব্দের plantation কবিতার গতিকে আস্কন্দিত করে বিস্মিত বন্ধন সুতোর ডোরে। ভালোবাসার সুতীব্র স্রোত হু হু করে টেনে নিয়ে যায় রোদের নিশ্চয়তায়।অথচ over-wordification নেই কোথাও।আহির ভৈরবের নিখুঁত তান যেন ইমনের পথে ছড়িয়ে দিয়ে যায় ঈশিতা।
কবি শাহীন রেজার কবিতায় একটা মেসেজ থাকে যা পাঠককে সহজেই ছুঁয়ে দেয়। তার কবিতার বিনির্মাণে এক সুখের বুভুৎসা বৈশ্বসিত হয়ে ওঠে চাওয়া পাওয়ার মানুষী শরীরে ।যেমন তার ' বাতিঘর' কবিতার অন্তর্গত আবেগ ---
"...... বলেছিলেন,বাবা কাউকে না কাউকে তো বাতি জ্বালাতেই হবে, হাতে তুলে নিতে হবে অন্ধকার তাড়ানোর কাজ। আমার মা একান্তে বাতি জ্বালানোর কাজটাই হাতে তুলে নিয়েছিলেন, বোধহয় সব মায়েরাই এমনটি করেন।আজ মা নেই, হ্যারিকেনের জায়গায় এসেছে বিজলী।বাতি জ্বলে, ঝরঝর আলো এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘরে বারান্দায় উঠোনে। শুধু দূরের ঝোপে কয়েকটা জোনাকি ভিজে চোখে তাকিয়ে থাকে আরও দূরে গভীর অন্ধকারের দিকে।"বুকের গভীরে সবুজ সমুদ্রে একটা নোনতা স্রোত বয়ে যায় পাঠকের সাইকেডেলিক  স্মরণে।চোখের কোটরে উল্লোল তখন তার। কবি শাহীন রেজার কবিতার এই structural intuition যেন বুকে নিয়ে কামোদ্দীপ্ত যুবতীর প্রবল অপ্রতিরোধ্য উচ্চাভিলাসের প্রিয়তম তীর্থভূমি হয়ে ওঠে কবি সৌমিত বসুর  'সংসার'এ----
" আমার তলোয়ার ঠিক তোমার দুটো বুকের মাঝে।রক্ত নয়,
থোকা থোকা চেরিফল আর আনন্দ।
জোৎস্না এসে পেতে দিয়েছে উঠোন তাতে গায়ে গা লাগিয়ে
বসে আছে তোমার স্থাবকেরা।
সমস্ত নিন্দামুখ দিয়ে বেরিয়ে আসছে টার্কিস ব্লু রঙের স্রোত
সেই রং দু'হাতে মেখে কারা যেন নেমে যাচ্ছে খাঁড়ির গভীরে। তুমি মৃত্যুঘুমে।"
প্রাণময় কোষে ভালোবাসা ভুলতে গিয়ে ভালোবাসারই বিনির্মাণ ---আধখানা প্রেমে আর আধখানা অপ্রেমে। ভালোবাসার ফেনাগুলো উথলে ওঠে, বলে যায় শরীরের চেনা পথে বিচরণ নির্ভার , চক্ষে নিয়ে গহন মেধার অমরত্বময় শিহরণ।
কবি সৌমিত বসুর কবিতা পড়তে পড়তে পাঠক sticky reader হয়ে যান যেখানে ঝিনুকের মধ্যে প্রবিষ্ট বালি ক্রমে ক্রমে মুক্তা হয়ে ওঠে পাঠকের হৃদয়ের অন্তর্গত ঘ্রাণে সহস্র নক্ষত্র -জ্বলা অনাবিলা যৌবনের সঙ্গম- লিপ্সায়।
কবি সৌমিত বসুর কবিতার তাড়ণে মানুষের নীরব বেদনার গন্ধ ভাসে কংকাল -কর্কশ সর্বনাশে ---
" উন্মাদদের থামানোর মতো কোনও ভাষা আবিষ্কার করেনি পৃথিবী।
তারা শুধু পারে দু- প্রান্তের বরফ গলিয়ে দিতে
সমুদ্রের পাড় থেকে সরিয়ে দিতে সবুজ আর পাখিদের ডানা কেটে
পালকগুলো গুঁজে নিতে মাথায়।
দেখতে দেখতে একদিন সমস্ত ধুলোয় ঢেকে যাবে।
তাহলে আজ এখান থেকেই শুরু করি।"
শুরুর গল্প ঠিক ধরে ফেলেন কবি শাহীন --
" মানুষের হাত ধরে ভীড়ের মধ্যে হাঁটা ছায়াটাও কেমন মানুষ হয়ে ওঠে। ভীড়ের ভেতরে জোছনা ঢোকেনা, প্রেমবালিকার চোরা চোখ ঝলসে ওঠে না --তবুও লোকটা মানুষ হয়ে উঠল, অন্ধ দৃষ্টি মেলে খুঁজল মেঘের বেদীতে ফুটে ওঠা কয়েকটি নক্ষত্র। অমানুষের ভাষা আলাদা, লোকটা খাঁটি বাংলায় সুর করে গাইতে শুরু করল ---" আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি "। মনে পড়ে কবি শেলীর কথাটা --" পৃথিবীতে যা কিছু সুন্দর,যা কিছু মহৎ, কবিতা তাকে চিরঞ্জীব করে রাখে।"

দুই কবির কবিতার বিষয়ের বৈভব মোহিত করার মতো। প্রেমে -অপ্রেমে, নিদ্রায়- জাগরণে, সহজে - জটিলে , আকাশে - মাটিতে , আনন্দে -জ্ঞানে আলোয় বিচ্চুরিত করতে থাকে ,স্বপ্ন দেখায় --মিলন ও বিদায়ের প্রয়োজন অনুভব করায়। কবি সৌমিত বসুর কবিতায় রজনীগন্ধার সৌরভের সাথে মিশে থাকে নাগকেশরের উগ্ৰতা।অন্যদিকে কবি শাহীন রেজার কবিতায় পাঠক সন্ধান পান মমতাময় এক বিস্তৃত আঁচলের সাথে রঙিন নুড়ির ওপর দিয়ে তিরতির করে বয়ে চলা এক ভরসার পদাবলী।
কবি শাহীন রেজা  লেখেন ---
" সবকিছুকে ছাপিয়ে উর্ধ্বমূখি যে মন্ত্রের উচ্চারণ তার নামই তো কবিতা।
আমি কবিতার প্রচ্ছদে এঁকে রেখে যেতে চাই আমার সমস্ত বিকেল এবং সন্ধ্যাকে
অতঃপর মায়াগন্ধরাজ হয়ে পৌঁছে যেতে চাই আকাশের দূরতম মেঘে
শুধু ঘ্রাণে ঘ্রাণে জল হয়ে নেমে আসার প্রতিক্ষায়।"
একটা  fantasy পাঠককে মাতিয়ে তোলে যেন মহুয়া ঘ্রাণে।কবি তো এভাবেই চান কবিতা নেমে আসুক বুকের শ্রাবণে শরীরের অলিতে গলিতে
যৌনতার গন্ধে।তাই তো কবি সৌমিত বসু তা খুঁজে পান তার স্বপ্নের বেসিনে বারংবার -----
" নাভি থেকে একটু একটু করে নেমে আসছে
জল।বস্তির বাথরুমের ফুটোর চোখ রেখে লাগাতার আকাশে উড়ে চলছে ঝাটুচরণ রিকশাওয়ালা।"
আবছা আলোয় বারবণিতার কাঁধে হাত রেখে উঠে দাঁড়াচ্ছে সঙ্গমক্লান্ত অক্ষরেরা, কবি সৌমিতের অক্ষর -টেবিলের বাতিদানের চোখে হাত রাখা , ঠোঁটে লেগে থাকা  হু হু জ্বলা সঙ্গম লিপ্সা ---
"প্রথম বউকে দেখলে সুধন্যর গা বেয়ে
বিদ্যুৎ নামে, কিছু ওঠে না।সে ভাবে,
মানুষ এতো খারাপ দেখতে হয় কিভাবে।
ঘরে আশিষদা থাকলে দ্বিতীয় বউ তাকে
ঘুরে আসতে বলে। খানিকটা পর ঘুরে এলে সুধন্যকে দেবার মতো
তার আর কিছুই থাকে না।
সুধন্য জিভ দিয়ে পাতা চাটে,গাল বেয়ে
ফোঁটা ফোঁটা ঝোল গড়ায়।"
এ বর্ণনায় এই সব রাতে পাঠকের হৃদয়ে মৃত্যু আসে --- হৃদয়ের অন্ধকারে পড়ে থাকে কুন্ডলী পাকিয়ে ব্যর্থ এক জয়নুলী কাক।

কবি শাহীন রেজার Psychological Structure বড়ো মায়াময় লাগে উপমার দ্যোতনায় ---
" আমাকে ছুঁয়ে যাবে না'কি রাত্রিকে?
কবির শরীর সেতো মায়াঘন কিশোরীর রোদ
ছায়ার স্তন হয়ে যে দুলে যায়
মার্ক টোয়েনের মৃদু জানালায়।
আটপৌরে দুপুর ছাড়িয়ে উঠে যায় বিকেলসিঁড়িতে
পানকৌড়ি ঘুম; আহা --"
            অথবা
" এই কবিতাটি সত্যিই তার জন্যে
কালিটি'র বৃষ্টিভেজা পথে যে খুঁজে পেয়েছিলো মালতীর গন্ধমাখা হার
আর একান্ত নির্ভয়ে স্বপ্নশিকড় গেঁথেছিলো উজানের চরে।"
একটা Paradoxical Relevance উঠে আসে এখানে, যেন আনন্দময় বনভোজনের পরিশেষে কোনো নদীর মতো অভিমানে যৌবন চলে গেছে নিরুদ্দেশে।কবি সৌমিত বসুর কবিতাতেও তা আরো  বেশি করে চোখে পড়ে ---
" বাতাস যেখানে অতিশয় দ্রুত বয়
সেখানেই শ্বাস নিয়েছ, কিসের ভুল?
তারা হতে গিয়ে যেসব মেয়েরা পোড়ে
আমি তার পাশে ধ্রুবতারা হয়ে থাকি।"

শব্দশৃঙ্গারে কবি সৌমিত বসুর জুড়ি মেলা ভার।
" কতদূর যেতে পারো তুমি? কতদূর? যেদিন জোৎস্না ও সমুদ্রের শঙ্খ লাগবে, তুমি জড়িয়ে ধরবে আমায় লেজ দিয়ে পাকে পাকে,মেঘ ভেবে পাবেনা কোথায় জল ঝরাতে হয়, ঠিক কোথায় থামাতে হয় আবর্তনের সেতুবন্ধন। তুমি রোদ হয়ে ওঠার আগেই আমি কপাল থেকে সরিয়ে নেবো সমস্ত নৌকো।সমস্ত জলপ্রপাত ঈর্ষা হয়ে তাকিয়ে থাকবে আমাদের বরফশীতল দেহদুটোর দিকে।"একটা দৃশ্যকল্প ভেসে ওঠে যেন গীতগোবিন্দের হাত ধরে ' কৃষ্ণকথা ' হয়ে.....
" স্ফুরতু কুচকুম্ভয়োরুপরি   মণিমঞ্জরী
               রঞ্জয়তু তব হৃদয় দেশং।
রসতু রসনাপি তব ঘনজঘন মন্ডলে
               ঘোষয়তু মন্মথনিদেশং।।"
 
কবি শাহীন রেজা ও সৌমিত বসুর কবিতায় creative imagination এর একটা বড়ো জায়গা আছে কবিতা সৃষ্টির পথে যা অনিবার্যভাবে পাঠককে আকর্ষণের কারণ।কোলেরিজ একেই বলেছেন Esemplastic imagination যা " tends to objectize itself and to know itself in the object"।
কবি সৌমিত বসু লিখছেন --
"ঘুরে বেড়াচ্ছে স্মৃতি বরাবর।আর ডাকগুলো ফড়িং এর মতো উড়ে এসে বসছে স্মৃতির ওপরে।
একটি শ্মশান হেঁটে চলেছে একলা গ্ৰামের আলপথ ধরে।
সব দেখাই তাহলে একদিন ভুল হয়ে যায় ?
সব ভালোবাসার গুঁড়োই একদিন।"
সাবলীল,ব্যঞ্জনাময়,সংহত শাহীন রেজার যোগ্য সঙ্গত  ---
"একটি চুমু মা হয়; একটি চুমু হেঁটে হেঁটে ভাদ্রের দিকে
জোনাক আদর হয়ে বিলি কাটে চুলে
একটি চুমু বাবা'র আঙ্গুল হয়ে বাড়ি ফেরে সাঁঝের আলোয়
জিলিপির ঠোঙ্গা নিয়ে হাতে
একটি চুমু ভাই হয়; বোনহীন ধূসর জমিনে আঁকে
চাঁদের প্রলেপ, ধনচের দীর্ঘ সারি "
দুই কবির কবিতার discourse আলাদা ঘরানা তৈরি করে যাকে Literature of power  বা ভাবের সাহিত্য বলা যেতে পারে। দুই কবির কবিতার motive ও pattern কিছুক্ষেত্রে স্বাতন্ত্র্যে ভরা। নিজস্বতা যেখানে মাধবীলতার মতো আঁকড়ে ধরে কবিতার অক্ষর।মুখ্যতঃ দুই ধারার কবিতার সঙ্গে সহবাস করেন পাঠক যেখানে মেধার বিচ্চুরণ, উপমার সাহসী সঙ্গম , উপস্থাপনের রাজকীয় রহস্য, শব্দের প্রায়োগিক দ্রুতির জয়োল্লাস বারে বারে এক স্বতন্ত্র দ্বীপের মতো জেগে ওঠে।কবি সৌমিতের পদ্যময়তা মায়াময় নূপুরের মতো বাজলে ,কবি শাহীনের গদ্যকবিতা বিটোফেনের সিম্ফনি হয়ে মাতাল করে তোলে। স্বাতন্ত্র্যেই মূলতঃ দুই ধারার অস্তিত্ব, যদিও তারা মিলিত হয়ে একই প্রবাহে বয়ে চলে পাগলপারা এক নদীর মতো বাউলের একতারা ছন্দে। মিলনের আকুতি দুই কবির কবিতার অক্ষরের নাভিমুখ, তাদের  ভালোবাসার নীলকন্ঠ পাখির ডাক।গুলজারের মতো তারা বিরাট পৃথিবী আর সুবিশাল সময়কে  যেন সেবা করে আত্মস্থ হতে চান প্রবল বন্ধুতার এক সরলরেখায়......
"মনজর এক বুলন্দি পর অওর হম বনা সকতে
অর্শ সে উধর হোতা কাশ কে মকান আপনা।"
দৃশ্যপট এক বানাতে পারতেন দুই কবিই অন্য উচ্চতায়, শুধু যদি  ওপারে হোত বাসা পাখির পালকের নীলিমায়।

                     ************




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কবি চন্দন রায়ের কবিতা সংকলনের রিভিউ

প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতার দ্রুতি ও মন্দন

কবিতা অঞ্জলি: পূর্ণতার উড়ান