পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অণুগল্প: জীবন কাঁপে বিষুবরেখায়

ছবি
দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়  ডাউন পাশকুড়া লোকালের খবরটা শুনেই ছোটা শুরু। সিঁড়ি দিয়ে নামতেই হৃৎপিণ্ড যেন বিস্ময়ে হাতে ! সঞ্চিতা না? কিন্তু ও এখন কোথা থেকে আসবে? নির্নিমেষ চেয়ে থাকা । সেই চোখ, সেই মুখ, সেই রাতকালো চুল! মন মানে না----সে তো দীর্ঘকাল আগেই হাড়িয়ে গেছে আমাদের থেকে।সে তো...... সময়টা তখন স্নাতকের তৃতীয় বর্ষ । অর্থনীতি নিয়ে স্নাতকে পড়ি রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যা মন্দিরে। ম্যাক্রো ইকোনমিকসের বেশ কিছু বিষয় খুব জটিল লাগছিল বলে টিউশন নিলাম ড: নিলাদ্র ী সেনগুপ্ত স্যারের কাছে।প্রথম দিনই বন্ধুত্ব হয় সঞ্চিতার সাথে। প্রেসিডেন্সির মেয়ে। থাকে বেলেঘাটায়। পড়ার পর হেদুয়ায় আড্ডা চলত আমাদের। ওর সরলতায় আমরা আশ্চর্য হতাম খুব। কোন দেমাক নেই।ওর দেশের বাড়ি ছিল বোলপুরে। শান্তিনিকেতনের গল্প যখন ও বলতো, মন্ত্রমুগ্ধ আমরা। মাটির সোঁদা গন্ধ যেন ওর কথায়, সরলতায় মোড়া যেন ওর আচরণ।সেই প্রান্তিকের গল্প। সেই খোয়াই----সেই পৌষ মেলা---সেই দোল ! মনটা কয়েক মুহূর্ত যেন আটকে ছিল ফেলা আসা অতীতে। সম্বিৎ ফিরল পঙ্কজের ডাকে।মেয়েটার দিকে আবার তাকালাম। সারা মুখে যেন নিকষ কালো মেঘ! জীবন থেকে হারিয়ে যেতে থাকা...

অণুগল্প: ক্ষয়

ছবি
 দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় একাকী নির্জনে। 'কিছুক্ষণ' বৃদ্ধাশ্রমের দোতলার বারান্দায় চেয়ারে বসে লোপাদি। দূর থেকে দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের সন্ধ্যারতির আওয়াজ। নীচে গঙ্গার মতোই লোপাদির মনেও আবেগের জোয়ারের ছলাৎছল। লোপামুদ্রা ব্যানার্জী। উত্তরপাড়ার গার্লস স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা। স্বামী ছিলেন ব্যাঙ্ক কর্মী। একমাত্র সন্তানকে জীবনের রামধনুর রঙে বড় করেছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার অর্ক অফিসেই জীবনসঙ্গী খুঁজে পেল।ছেলের সুখের কথা ভেবে স্বামী স্ত্রী মেনে নিলেন সম্পর্কটা। কিন্তু ছ'মাস পরই হল তিক্ততা শুরু। বয়স্ক বাবা মার স্থান হলো চিলেকোঠার ছোট্ট ঘরে। একরাতে স্বামীর বুকের ব্যথা উঠলে ছুটলেন লোপাদি ছেলের ঘরে। বন্ধ দরজায় ব্যাকুল আঘাত ওপার থেকে নির্লিপ্ততায় ফিরে এলো। স্বামী কোলে মৃত্যু দেখলেন লোপাদি। সকালে কাজের মেয়ের চিৎকারে জানল সকলেই। প্রতিবাদের ঝড় উঠল। নির্বাক লোপাদি যেন নীলকন্ঠ ! জীবন মন্থন থেকে কখন যে গরল উঠে এসেছে ! শ্রাদ্ধের কাজ মিটতেই উত্তর পাড়ার খেয়াঘাটের পাশে এই বৃদ্ধাশ্রমে। স্বেচ্ছা নির্বাসনে ! দীর্ঘ পনেরো বছর পর আবার নাতির মুখ দেখা। জন্মদিনে বাবা-মাকে না জানিয়ে দিদুনের কাছে ...

কবিতা : আমার বৃষ্টিরা

ছবি
 দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় বৃষ্টির জলে স্মৃতির ফসফরাস জ্বলে কাল সারারাত পথ চলা আঙ্গুলে আঙ্গুল এক ছাতায় একাকার দুই হৃদয় বৃষ্টির জলে স্মৃতির ফসফরাস জ্বলে ফাঁকা মিনিবাসের পিছনের সিট  আবেশে বুঁদ দুই শরীর কখন যেন আস্তে আস্তে গাছ হয়ে যায় বৃষ্টির জলে স্মৃতির ফসফরাস জ্বলে ঘন পাইন বনে চুঁইয়ে পরা বৃষ্টির জল তরঙ্গ পাহাড়ের বুকে চুমু খেয়ে মেঘ হয়ে যায় বৃষ্টির জলে স্মৃতির ফসফরাস জ্বলে মাধবীলতার ভেজা জলে  শরীর নেভাতে গিয়ে বিস্ফোরণের সলতেতে আগুন লাগায় কাল সারারাত স্মৃতির শরীর পুড়ে  সকাল চেয়ে দেখে ছাই হয়ে পড়ে আছে আমার বর্তমান

কবিতা: বৃষ্টি বরণ

ছবি
  দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় তোমাকে দেখবো বলে সুদূর আজ নৈকট্যের চেহারায় উড়ন্ত মেঘের সাথে ছুটে চলা গন্তব্য রোমন্থন করে চলে স্মৃতির তোমাকে শুনবো বলে কানে তো এখন ছলাৎ ছল বৃষ্টির ফোঁটাদের টুপটাপ ভালো বাসার সরণীতে এও এক যাপন তোমাকে পাবো বলে কাশের দোলায় দুলে ওঠে মন চলমান তোমার বুকে ভরসার খোঁজ ক্ষয়ে যাওয়া জীবনে আজ বড়ো আপন তোমাকে ভাববো বলে  সময় থমকে আজ অতীতচারি হাতে হাত বিবশতা আবেশী হৃদয় আছি ছিলাম থাকবোর ঝঙ্কার ই সুখগুলো সব মুখ থেকে সারা শরীরে যখন খেলা করে চলেছে আনন্দ যখন এক হাত থেকে অন্য হাতে অবলীলায় আশ্রয় খুঁজছে তখন ও তোমাকে কাছে পাওয়া  নিদারুণ নিরহঙ্কার....

কবিতা: বৃষ্টি গ্রহণ

ছবি
  দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় নির্জন রাজপথে বৃষ্টির ফোঁটা গুলো মনের আনন্দে এককা দোক্কা খেলে চলেছে বৃষ্টি জানে তার এই গান একসময় কোরাস হয়ে বাজবে রাতজাগা ছেলেটার কানে প্রেমের পাপড়িগুলো ঝেড়ে ফেলে মেয়েটা আজ ভরসার ফুলশয্যায় আদর বৃষ্টি মাখবে সারা গায় আর ভাবুক ছেলেটা একলা বৃষ্টির গান শুনে অবিশ্বাসের আস্ত রাত গিলে গিলে খায়

কবিতা: বৃষ্টি ভেজা

ছবি
 দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় ধরো আবার যদি দেখা হয় পথ চলতে চলতে কি বলবে আমায়? থরো থরো ঠোঁটে আবেগ চেপে হয়তো বলবে, কেমন আছো? তোমার কান্নার শরীর আমার কান ছোঁবে হৃদয়ে ঝাপটাবে বৃষ্টিভেজা সে দুপুর পাশের মানুষের হাত শক্ত করে ধরে বোঝাতে চাইবে ভরসায় আছো কিন্তু ভালোবাসায়? নরম তুলতুলে চোখ দুটো বলবে বলবেই আমি নিশ্চিত জানি আজ ও দুয়ারে আসনখানি পাতা আজ ও বৃষ্টিরা আমার শরীর আঁকে তোমার নির্জনতায়........

কবিতা: বৃষ্টির গল্প

ছবি
 দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় গল্পটা বলবো বলে অরণ্যে একদিন হারিয়ে যেতে যেতে তাকে খুঁজেছিলাম........ গল্পটা বলবোই বৃষ্টির গল্পটা আগুন-ভেজা শরীরে প্রেমের ফানুস তুমি বুঝবে বুঝবে বলেই গভীরে যেতে যেতে একদিন বৃষ্টি তোমার শরীরে নামিয়ে ছিলাম পাতার গড়িয়ে পড়া ফোঁটায় যখন শব্দের শিশু গুলোর  আবোল তাবোল  হঠাৎ তোমার কান্নার শরীর আমার শরীর ছুঁলো মনের কপাট খুলে ব্যাকুল পাগল দুহাত তুলে জানায় এখন আসি হয়তো আবার অন্য গল্প বলা অন্তহীন অন্তহীন অন্তহীন ভালোবাসি....